অরবিন্দ রায়
এশিয়া মহাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন নরসিংদীর ঘোড়াশাল - পলাশ ইউরিয়া সারকারখানায় যান্ত্রিক সমস্যার কারনে ৭ দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ । ইউরিয়া সার কারখানা ভরা মৌসুমে উৎপাদন বন্ধ থাকায় কৃষকরা হতাশায় মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সারকারখানার উৎপাদন বন্ধের বিষয়ে সার কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (বাণিজ্য) আতিকুর রহমান খান জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি গনমাধ্যমকে আরও জানান, বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বস্তা এবং খোলা অবস্থায় প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। গত অর্থবছর এ কারখানা থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন। এই কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ধারন ক্ষমতা রয়েছে ১০ লাখ মেট্রিক টন।
সার কারখানার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে কারখানার হঠাৎ ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সার উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় দৈনিক ২ হাজার ৮শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন থেকে সার কারখানাটি বঞ্চিত হচ্ছে।
ঘোড়াশাল - পলাশ সারকারখানায় সার উৎপাদন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে ধান ও শাক সবজির ভরা মৌসুমে কৃষকরা সার সংকটের
পড়তে পারে। ইউরিয়া সার ফসলের জন্য অপরিহার্য। সার সঠিক সময়ে ফসলে দিতে না পারলে ফসল উৎপাদন কমে যায় ও ফলনও ক্ষতিগ্রস্হ হয়। ফসল নষ্ট হলে কৃষক আর্থিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। ইউরিয়া সার সংকট হলে বাজারে সারের বেড়ে যায়। সারকারখানার সমস্যার সমাধান করে দ্রুত উৎপাদন চালু করার আশা করছেন কৃষকসহ সচেতন মহল।
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সারকারখানাটি স্থাপনের পর ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়। ফলে কারখানাটি থেকে বার্ষিক ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদনের ধারন ক্ষমতা রয়েছে।
সার কারখানার জিএম (কারিগরি) সরফরাজ খান গনমাধ্যমকে জানান, কারখানাটির উৎপাদন গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে কারখানায় কোন ইউরিয়া সার উৎপাদন হচ্ছে না। কি কারণে কারখানায় এর ত্রুটি দেখা দিয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আমাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটি তিন দিনের মধ্যে কারখানাটি বন্ধের কারণ ও প্রস্তাবনা দিতে বলা হয়েছে।
কারখানার জিএম (প্রশাসন) মোঃ ফখরুল আলম গণমাধ্যম কে জানান, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই ইউরিয়া সার কারখানায় গত অর্থবছরে আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেও অতিরিক্ত সার উৎপাদন করেছি। বৃহস্পতিবার হঠাৎ উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।আশা করছি সারকারখানা টি দ্রুতই আবার উৎপাদন শুরু হবে। সারকারখানা থেকে উৎপাদিত বস্তা ও খোলা অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে সার গুদামে রয়েছে।
ঘোড়াশাল - পলাশ ইউরিয়া সারকারখানা দ্রুত চালু করা না হলে ইউরিয়া সার দেশের ঘাটতি পড়তে পারে। এতে ইউরিয়া সারের দাম বাজারে বাড়তে পারে বলে ধারনা করছেন অনেকেই ।
মন্তব্য করুন