নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার যোগানিয়া বাজার মোড় এলাকায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট-এর গাড়ি ও মোটরসাইকেল বহরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ রবিবার, ১৮ মে, দুপুরের দিকে এ হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাংবাদিকরাও রয়েছেন। আব্দুল লতিফ সম্রাট সহ গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তিতে আব্দুল লতিফ সম্রাট কে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
আব্দুল লতিফ সম্রাট বিনোদনমূলক ও ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতাতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে নড়াইলের কালিয়ার বেন্দারচর সোয়াবিল এলাকায় যাচ্ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ হয়ে যোগানিয়া এলাকা অতিক্রম করার সময়ই তার বহরকে লক্ষ্য করে এই হামলা হয়।
ভূক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক থেকে দেড়শ' জনের একটি সংঘবদ্ধ দল, যাদের সম্পর্কে ধারণা করা হচ্ছে তারা বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারী, অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা, রড ও দাহ্য পদার্থ দিয়ে বহরে থাকা অন্তত ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও কয়েকটি মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়, গাড়ি ভাঙচুর, এবং গাড়ির ভিতরে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়াও হামলার শিকার হয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক তাদের মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
কালিয়া পৌর- বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌরসভার কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, “সম্রাট সাহেব ঢাকা থেকে এসেছেন নিজের নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শনে এবং ঘোড়াদৌড় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, আমরা চাপাইল ব্রিজ থেকে তাকে গ্রহণ করি এবং বেন্দারচরের দিকে যাত্রা করি। পথে যোগানিয়ায় জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের অনুসারীরা হামলা চালায়।”
ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বক্তব্য দিতে না পারলেও, পরে সংক্ষিপ্তভাবে আব্দুল লতিফ সম্রাট বলেন, “আমি রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছিলাম না। এলাকা সফর ও একটি ক্রীড়া আয়োজনে ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসাবে যোগদানের জন্য যাচ্ছিলাম। এই হামলা রাজনৈতিক হিংসার নগ্ন প্রকাশ এবং সাংবাদিকদের ওপর সরাসরি আঘাত।”
নড়াইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক মুন্সি আসাবুর রহমান আরাফাত অভিযোগ করে বলেন, “এই হামলার পেছনে রয়েছেন বিশ্বাস জাহাঙ্গীর, মিঠু বিশ্বাস, আবুল খাঁ ও নড়াগাতী থানা বিএনপির একটি সুবিধাবাদী অংশ।”
কালিয়া পৌরসভা সাবেক কমিশনার ও কালিয়া পৌর- বিএনপির সহ সভাপতি রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও তারা কোন ভূমিকা নেয়নি। যদি পুলিশ হস্তক্ষেপ করতো, তাহলে হামলা এড়ানো যেত।”
নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে এখনও কোন মামলা বা অভিযোগ হয়নি।
হামলার বিষয়ে নড়াইল জেলার বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রিসিভ না করার কারনে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন