সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘটিত ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এর ন্যক্কারজনক গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার ও আসামিদের ফাঁসির দাবিতে আজ (১২মে) সোমবার কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমসি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। সোমবার সকালে কলেজের প্রধান ফটকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষার্থী সাঈফ সায়হান। মানববন্ধনে এমসি কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন আয়েশা আক্তার, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ইশতিহাদ মিয়া, ইমরান আহমদ, সৈয়দ ইসমাইল, মোঃ রুহুল আমিন, মোঃ জামাল মিয়া ও আবু তায়েফ ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সৈয়দ আকরাম আল সাহান।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরের সেই ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে মামলার কার্যক্রম দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করে ছাত্রলীগের সেই নেতাকর্মীসহ সকল আসামিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। তারা বলেন, এমসি কলেজের মত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন বর্বরতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধর্ষণের শিকার শুধু একজন নারীই হননি, বরং এটি সমগ্র নারী সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কলঙ্কজনক। উল্লেখ্য, এই মামলার সাথে জড়িত ছয়জন অভিযুক্ত ব্যক্তি ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক রয়েছেন।
মানববন্ধনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে তারা ২০২০ সালের সেই নারকীয় ঘটনার ন্যায়বিচার চায় এবং ক্যাম্পাসে একটি নিরাপদ পরিবেশ দেখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এবং শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী একটি নবদম্পতিকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। এই জঘন্য ঘটনায় সারাদেশে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রধান আসামিরাও ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে, যা ছাত্র সংগঠনটির ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে। ঘটনার পরপরই ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।মামলাটি বর্তমানে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে রয়েছে ।
মন্তব্য করুন