অরবিন্দ রায়।।
রক্ষিত বাড়ির দুর্গা পূজা সম্প্রীতির এক মিলন মেলায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে।
রঘুনাথপুর রক্ষিত বাড়ির ২৯০ তম শারদীয় দূর্গোৎসব। রক্ষিত বাড়ির ১৭৩৫ সালে প্রথম দুর্গা পূজা শুরু করে। এলাকায় হিন্দু - মুসলিম সহ সকল ধর্মের মানুষের আগমনে পূজা প্রাঙ্গন মিলন মেলায় পরিনত হয়। অষ্টমী পূজা পেরিয়ে আজ মহা নবমী পূজা শেষ হয়েছে। মহা নবমী পূজা শেষে ভক্তদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। দেবী দুর্গার বিদায় ঘন্টা বেজে ওঠে। ভক্তদের মনে বেজে ওঠে বিষাদের সুর।
রক্ষিত বাড়ির দুর্গা পূজায় মন্দিরে আলোক সজ্জায় কারো সাথে প্রতিযোগিতা করে না। অনাড়ম্বর ভাবে প্রতিবছর রক্ষিত বাড়ির বংশ ধরেরা এ দুর্গা পূজা করে আসছেন। এ বছর প্রবীর কুমার রক্ষিত, আনন্দ মোহন রক্ষিত বাবুল, সাংবাদিক উৎপল কুমার রক্ষিত, বিপুল কুমার রক্ষিত, মনতোষ রক্ষিত পূর্ব পুরুষের নিয়ম রক্ষায় শারদীয় দুর্গা পূজা করছেন।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার । ১ অক্টোবর বুধবার মহা নবমী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে । শুভশক্তির উন্মেষের মাধ্যমে শক্তির বিনাশের মধ্য দিয়ে বিশ্বের শান্তি রক্ষায় প্রতিবছর মা দুর্গা পৃথিবীতে আসেন। শিউলি ফুলের সুগন্ধ কাশফুলের সুন্দর শোভাতেই আমরা বুঝতে পারছি মা আসছেন। দুর্গা মা ভক্তদের দুঃখ যন্ত্রনার অবসান করতে মা বছরে একবার আসেন । সারা বছর সুখে শান্তিতে তার ভক্তরা দিন কাটাতে পারেন সেই আশীর্বাদে মা দুর্গা পৃথিবীতে আসেন বলে বিশ্বাস করেন সনাতন ধর্মের মানুষ।
গাজীপুররের কালিয়াকৈর রঘুনাথপুর রক্ষিত মন্দিরে শারদীয় দুর্গা পূজা উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঢাকের শব্দ আর উলুধনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মন্দির প্রাঙ্গন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। অশুভ শক্তি ও অসুর বিনাশে এ বছর দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে এমনি বিশ্বাস করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রক্ষিত পরিবারের বংশধর সাংবাদিক উৎপল রক্ষিত জানান, বিশ্ব শান্তির কামনায় রক্ষিত পরিবার ২৯০ বছর ধরে দুর্গা পূজা পালন করে আসছে। এলাকার হিন্দু- মুসলিম সম্প্রীতির এক বন্ধন রক্ষিত বাড়ির দূর্গা পূজা। এলাকার সকল ধর্মের মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন দুর্যোগেও রক্ষিত বাড়ির দূর্গা পূজা পালন করে আসছে। দূর্গা পূজার মাধ্যমে রক্ষিত বাড়ি বিশ্বের মানুষের শান্তি কামনা করে।
মনতোষ রক্ষিত জানান, রক্ষিত বাড়ির দুর্গা পূজা সম্প্রীতি বন্ধন। পূজা উপলক্ষে রক্ষিত বাড়ি আঙিনায় এক মিলন মেলায় পরিনত হয়।
সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করে দেবী দুর্গার আর্শীবাদ যার উপর থাকে, সেই ব্যক্তিকে জীবনে কখনও কোন দুঃখ দুর্দশায় মধ্যে পড়তে হয় না। দেবী দুর্গার কৃপায় তার সংসারে সব সময় সুখ, শান্তি ও আনন্দে পরিপূর্ন থাকে।
২ অক্টোবর বহস্পতিবার দশমী বিহিত পূজা, প্রতিমা বিসর্জন, সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গা পূজার সমাপ্তি।
বিজয়া দশমীতে রঘুনাথপুর দশমীর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতে দশমী মেলা হয়ে উঠে উৎসব মুখর। এ যেন সম্প্রীতির এক মিলন মেলা।
প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত শিশু, নারী, পুরুষ সহ সব বয়সের মানুষের আগমনে পূজা মন্ডলগুলো হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
জাপান থেকে রাজীব রক্ষিত, কানাডা সুদীপ কুমার রক্ষিত, ভারতের চেন্নাই অরবিন্দ রক্ষিত, কলকাতা সত্য রঞ্জন রক্ষিত, অমিত রক্ষিত সহ দেশ বিদেশে অনেক রক্ষিত বাড়ির বংশধর রয়েছেন । বিভিন্ন দেশ থেকে ফোন করে জানান তারা রক্ষিত বাড়ির বংশধর। যদিও শারদীয় দুর্গা পূজায় তাদের কোন অংশ গ্রহন নেই। দেশের একাধিক পএিকায় রক্ষিত বাড়ির দুর্গা পূজার খবর প্রকাশিত হতে দেখে তারা আনন্দিত হয়েছেন। । রক্ষিত বাড়ির বংশধর হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা গর্বিত বোধ করছেন।
মন্তব্য করুন