নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গুজিরকোনা গ্রামের ৫২ বছর বয়সী খায়রুল বাসার চলতি বছরের স্নাতক সমমান (ডিগ্রি) বিএসএস পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একইসঙ্গে তার বড় মেয়ে মাহমুদা আক্তার বর্তমানে ডিগ্রি (স্নাতক) শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন।
খায়রুল বাসার ১৯৯৩ সালে এসএসসি এবং ১৯৯৫ সালে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর দুর্গাপুর কলেজ থেকে ১৯৯৭ সালে বিএসএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা থাকলেও পারিবারিক সমস্যার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। তবে অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে দীর্ঘ ২৮ বছর পর তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করে বিএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
খায়রুল বাসার পেশায় একজন এনজিও কর্মী। তিনি ডিএসকে ( দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ) নামক একটি উন্নয়ন সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত আছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলের গর্বিত পিতা। তার বড় মেয়ে বিএসএস ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন, ছেলে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং ছোট মেয়ে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
দীর্ঘদিন পর আবার পড়ালেখায় ফেরার বিষয়ে খায়রুল বাসার বলেন,
"ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল ডিগ্রি অর্জন করার। কর্মস্থলের সহযোগিতা এবং পরিবারের অনুপ্রেরণায় আমি আবার পড়াশোনা শুরু করি। বিশেষ করে আমার স্ত্রী সবসময় পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন। সন্তানরাও আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। সেই শক্তি ও চেষ্টা দিয়েই আজ আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।"
অনেকে প্রশ্ন করেছেন, একই সময়ে মেয়ের সঙ্গে পড়তে লজ্জা লাগেনি? জবাবে খায়রুল বাসার বলেন,
"পড়াশোনার কোনো বয়স নেই। যে কেউ যেকোনো সময় পড়াশোনা শুরু করতে পারে। আমি চাই সবাই পড়াশোনায় ফিরে আসুক, নিজেকে আরও গড়ুক।"
ডিগ্রি অর্জন করায় পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা খায়রুল বাসারকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।