প্রহল্লাদ চন্দ্র ভৌমিক
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় পরকীয়ার সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বালুর নিচে পুঁতে রাখার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর স্বামী রাজন মিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নের করড়া গ্রামের রাজন মিয়া (৩২) ও তার স্ত্রী শাপলা বেগমের (২৭) সংসারে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। শাপলা স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
গত ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজন মিয়া তার স্ত্রীকে এক ব্যক্তির সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান বলে অভিযোগ। ওই সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তি পালিয়ে গেলে ক্ষিপ্ত রাজন স্ত্রী শাপলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু তিনি প্রেমিকের নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করলে উত্তেজিত রাজন উড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে মরদেহ ঘরের পাশে থাকা বালুর স্তূপে পুঁতে রাখেন।
পরদিন (৪ নভেম্বর) সকালে রাজন হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে গেলে আদালত মাধবপুর থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ রাজনকে আটক করে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে করড়া গ্রামের বালুর স্তূপ থেকে নিহত শাপলার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত শাপলা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা গ্রামের সুমন মিয়ার মেয়ে। তিনি স্বামীর সঙ্গে করড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, শাপলাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার স্বামী রাজন। এমন নৃশংসতা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। কিন্তু হত্যা করে মরদেহ লুকানোর মতো ঘটনা কেউ ভাবতেও পারেনি।
নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আতাউল মোস্তফা সুহেল বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন। এ ধরনের ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল্লাহ বলেন, রাজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরকীয়া সন্দেহ ও পারিবারিক কলহের জের ধরেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
তিনি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত রাজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।