শামীম ইসলাম শামীম
জয়পুরহাটে সরকারি হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার আরেকটি চিত্র দেখা গেছে। চালু লিফটেই মেরামত কাজ চলাকালীন সময় দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এক রোগীর স্বজন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের দক্ষিণ পাশের লিফটে।
আহত নারীর নাম জোবেদা বেগম (৫০)। তিনি জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের জলাটুল গ্রামের মোজাম্মেল হকের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জোবেদা বেগম তাঁর মেয়ের শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে প্রবেশের পর তিনি লিফটে ওঠেন, কিন্তু সেই সময় লিফটটি চালু অবস্থায় মেরামতের কাজ চলছিল। কোনো সতর্কতা সাইনবোর্ড বা নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেননি। কিছুক্ষণের মধ্যেই লিফট হঠাৎ নিচে নেমে যায় এবং তিনি নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন।
দুর্ঘটনার পরপরই উপস্থিত লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন।
আহতের স্বজন বজলুর রহমান বলেন,
> “আমার মা আনোয়ারা বেগম গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি হন। মঙ্গলবার আমার শ্বাশুড়ি তাঁকে দেখতে আসেন। লিফটে ওঠার সময় হঠাৎ নিচে পড়ে যান। এখন তিনি খুবই আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কেউ তখন লিফটে উঠতে নিষেধ করেনি, লিফটটি পুরোপুরি চালু ছিল।”
এদিকে, ঘটনাটি নিয়ে হাসপাতাল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন,
> “লিফটে কিছু টুকিটাকি কাজ চলছিল। লিফট খোলা ছিল, উনি এসে ঢুকে গেছেন। উনি আহত হয়েছেন, তবে বিষয়টা তাঁর অসাবধানতার কারণেই ঘটেছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই যন্ত্রপাতির অব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি ও নিরাপত্তা সংকট চলছে। লিফট ও অন্যান্য ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় রোগী ও স্বজনরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে থাকেন।
এই ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ হাসপাতাল প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।