কুমিল্লা লালমাই উপজেলার বাগমারা থেকে হাজতখোলা বাজার পর্যন্ত এবং হাজতখোলা থেকে পিপুলিয়া পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সাথে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আজ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। এই রাস্তাটি প্রতিদিন শত শত মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। এটি একদিকে যেমন শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও কৃষকের চলাচলের প্রধান পথ, তেমনি রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নেওয়ার একমাত্র সহজ উপায়।
কিন্তু দীর্ঘদিন কোনো ধরনের সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটিতে এখন ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষার সময়ে এই গর্তগুলোতে পানি জমে রীতিমতো ছোট ছোট খালে রূপ নেয়, আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি ও কাঁকরযুক্ত এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে রোগী পরিবহন কিংবা গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে নেওয়ার সময় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে পৌঁছায় পরিস্থিতি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাগমারা থেকে হাজতখোলা বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে যায়। সড়কের উপরের পিচ উঠে অনেক জায়গায় জমেছে ১ থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত কাঁদা। সড়কের কাতালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, বেতাগাঁও ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, বলিপদুয়া চার মোড় এলাকাসহ অন্তত ১৩টি স্থান দেবে গেছে। এসব জায়গায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয়রা।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ইজিবাইক চালক জামাল বলেন, ‘রাস্তার যে বেহাল দশা, তাতে চলাচল করা খুবই কষ্ট। কয়েকদিনে দুইবার আমার ইজিবাইক উল্টে গেছে। তারপরও গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়, গাড়ি না চালালে খাব কী।’
সিএনজি ওমর ফারুক বলেন, ‘বাগমারা থেকে হাজতখোলা মাত্র সাড়ে ৫ কিলোমিটার পথ যেতে স্বাভাবিকভাবে ১০-১২ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু খানাখন্দের কারণে ৪০মিনিটের বেশি সময় লাগে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হয়। আমাদের গাড়ির বেশ ক্ষতি হয়।’
স্থানীয় বেতাগাঁও ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা’র অধ্যক্ষ মাওলানা মীর আহমদ বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রায়ই চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সড়কটি সংস্কার না হওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় হয় যাতায়াতে।
লালমাই উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মোসাঃ সাবরীন মাহফুজ জানান, সড়কটির প্রশস্তকরণ ও সংস্কারের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।