বরগুনার তালতলী উপজেলায় একটি মাদ্রাসায় ১১ বছরের এক ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষকের পা চাটানো ও ময়লা খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (বুধবার) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার লাউপাড়া এলাকার মারকাজুল কুরআন আরবি মাদ্রাসায়। অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান (২৬) ওই মাদ্রাসায় ইংরেজি ও গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন ।
ছাত্রীর বাবা শাহিন আকন জানান, আমার মেয়ে পড়া না পারায় শিক্ষক তাকে একা রুমে ডেকে নেয়। পরে ভয় দেখিয়ে নিজের পা চাটাতে বাধ্য করে এবং মাটিতে পড়ে থাকা নোংরা ময়লা খাওয়ায়। এ ঘটনাকে অমানবিক ও ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে স্থানীয়রা দ্রুত অভিযুক্তের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান,বলেন আমি শুধু ময়লা খাওয়ানোর কথা বলেছি তাছাড়া কিছুই না। আর অন্যান্য যে অভিযোগগুলো রয়েছে সেগুলো মিথ্যা।
তালতলী শিশু সুরক্ষা কমিটির সভাপতি হাইরাজ মাঝি বলেন,শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর এমন আচরণ লজ্জাজনক। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এটি কল্পনাও করা যায় না।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এবং আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী এডভোকেট মিজানুর রহমান সিকদার জানান,এটি সরাসরি শিশুর প্রতি অমানবিকতা ও সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। দণ্ডবিধির ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতির অভিযোগে মামলা করা যেতে পারে। এছাড়া শিশু আইন ২০১৩-এর ধারা ৭, ৮, ও ৯ অনুযায়ী অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের আচরণ শিক্ষকতা পেশার অপমান এবং সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ জালাল বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ভুক্তভোগী শিশুটির মানসিক অবস্থা বিপর্যস্ত বলে জানা গেছে। পরিবারটি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।