দ্বিতীয় বলেই উইকেটের দেখা। পরে এক ওভারে আরও দুই শিকার। ভাইটালিটি ব্লাস্টে আরও একটি ম্যাচে তিন উইকেট নিলেন জেমস অ্যান্ডারসন। কে বলবে, ৪২ বছর বয়সী পেসার এই প্রতিযোগিতা দিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিরেছেন প্রায় ১১ বছর পর!
ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে আসরে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে ১৫ ওভার বোলিং করে ১০ উইকেট নিয়েছেন টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার অ্যান্ডারসন। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন কেবল ৬.৮৬ করে। চার ম্যাচের তিনটিতে নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। প্রতিটি ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে বোলিং করেছেন তিন ওভার।
এই আসরের আগে অ্যান্ডারসন সবশেষ কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে
উস্টারশায়ারের বিপক্ষে শুক্রবার ল্যাঙ্কাশায়ারের ৭ উইকেটে জয়ের ম্যাচে চার ওভারে অ্যান্ডারসনের শিকার ৩২ রানে ৩ উইকেট।
উস্টারে ম্যাচের দ্বিতীয় বলে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ব্রেট ডি’অলিভেইরাকে ফিরিয়ে তার শিকার ধরা শুরু। এ দিন পাওয়ার প্লেতে তিন ওভার বোলিং করে ২৭ রানে তার প্রাপ্তি ওই একটি উইকেট।
নিজের কোটার শেষ ওভারটি করেন তিনি ইনিংসের ষোড়শ ওভারে। এবার স্রেফ ৫ রান দিয়ে তুলে নেন গ্যারেথ রডারিক ও ফাতেহ সিংয়ের উইকেট।
উস্টারশায়ারকে ১৪৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১৫ বল বাকি থাকতে সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ল্যাঙ্কাশায়ার।
গত ১ জুন চেস্টার-লি-স্ট্রিটে ডারহামের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অ্যান্ডারসন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফেরেন ৩ হাজার ৯৩৫ দিন পর। উপলক্ষটা রাঙান তিনি ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে, চার ওভারে স্রেফ ১৭ রানে নেন ৩ উইকেট।
পরের ম্যাচে লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে তিন ওভারে ২৩ রান দিয়ে তার শিকার ছিল একটি। এরপর নর্থ্যাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে চার ওভারে ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। পরের ম্যাচেও পেলেন সমানসংখ্যক উইকেট।
খেলেছিলেন ২০১৪ সালের অগাস্টে, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের ফাইনালে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে।
টেস্ট ও ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে খুব বেশি আক্ষেপ তার নেই। সম্প্রতি লর্ডসে এক অনুষ্ঠানে একটি আক্ষেপের কথা শোনান তিনি।
“সত্যিই আমি উপভোগ করছি (টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফেরা)। অসাধারণ ব্যাপার। সবে তো তিনটি ম্যাচ খেলেছি এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমার ভাবনা খুব দ্রুত বদলে যেতে পারে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, গত ১০ বছরে আমি কিছু একটা মিস করেছি… গত ১০ বছরে আরও একটু বেশি (টি-টোয়েন্টি) খেলতে পারলে ভালো হতো।”
গত বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট দিয়ে আলো ঝলমলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন অ্যান্ডারসন। বিদায়ী ম্যাচে চার উইকেট শিকার করে টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার থেমে যান ৭০৪ উইকেট নিয়ে। পরে তিনি বোলিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন ইংল্যান্ডের কোচিং স্টাফে।
তার খেলোয়াড়ি জীবন তখন শেষ বলেই মনে করা হচ্ছিল। কোচিংয়ের পাশাপাশি টিভিতে ধারাভাষ্যকার ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু গত জানুয়ারিতে ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে আবার বল হাতে ছুটছেন আগামী জুলাইয়ে ৪৩ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া অ্যান্ডারসন।
মন্তব্য করুন