এম জিশান পারভেজ।।
ওভালে এর আগে কোনো দল চতুর্থ ইনিংসে ২৬৩ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি। সেটিও সেই ১৯০২ সালে। সেখানে ইংল্যান্ডের সামনের জয়ের লক্ষ্য ছিল ৩৭৪ রান। ইনিংসের শুরুতেই তাই সবাই ফেবারিট ধরে নিয়েছিলেন ভারতকে। কিন্তু বেন স্টোকসের এই ইংল্যান্ড, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের এই ইংল্যান্ড কোনো লক্ষ্যকেই অনতিক্রম্য মনে করে না। অতীত ইতিহাসকেও থোড়াই কেয়ার করে।
জো রুট ও হ্যারি ব্রুক যতক্ষণ ব্যাটিং করছিলেন, মনে হচ্ছিল, নতুন রেকর্ড গড়ে হেসেখেলেই জিতে যাবে ইংল্যান্ড। দুজনের ১৯৫ রানের জুটিতে একসময় ইংল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ৩০১। দুজনই অসহায় বানিয়ে ফেলেছেন ভারতীয় বোলারদের। কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচের রং বদলে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। হ্যারি ব্রুককে ফিরিয়ে দিলেন আকাশ দীপ। মিড অফে ক্যাচটা নিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। যে সিরাজের কারণেই এত দূর যেতে পেরেছেন ব্রুক। করতে পেরেছেন ১১১।
অথচ ব্রুকের রান যখন মাত্র ১৯, তখনই ফিরে যেতে পারতেন। হ্যারি ব্রুকের তোলা ক্যাচটি দারুণভাবেই হাতে জমিয়েছিলেন ভারতীয় পেসার। তবে বিশ্বাসঘাতকতা করল পা। ভারসাম্য হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলল ফাইন লেগ অঞ্চলের সীমানারেখা। ১৯ রানে ফিরে যেতে যেতে ছক্কা উপহার পেয়ে গেলেন ব্রুক। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে প্রসিধ কৃষ্ণার বলে সিরাজ ক্যাচটি নিতে পারলে ইংল্যান্ডের স্কোর হয়ে যেত ৪ উইকেটে ১৩৭।
৯১ বলে সেঞ্চুরি করা সেই ব্রুক যখন শেষ পর্যন্ত আউট হলেন, তখন ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় নিয়ে বলতে গেলে তেমন কোনো সংশয়ই নেই। প্রয়োজন ৭৩ রান। উইকেটে রাজত্ব করছেন রুট। কিন্তু ওই ৭৩ রানের ৩১ যোগ হওয়ার পর হঠাৎই ম্যাচে ফিরে এল ভারত। ৫ রানের মধ্যে পড়ে গেল আরও ২ উইকেট। বেথেলের মতো রুটের উইকেটটিও নিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৯তম সেঞ্চুরি (১০৫) করে ফিরেছেন রুট। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ৩৩৭, তখনো দরকার ৩৭ রান।
যে সিরিজ এত নাটকীয়তা উপহার দিয়েছে, শেষটায় কি আর তাতে আরেকটু নাটক যোগ হবে না! আলোকস্বল্পতার কারণে তাই বন্ধ হয়ে গেল খেলা। কিছুক্ষণ পর নামা বৃষ্টি অকাল সমাপ্তি টেনে দিল দিনের খেলারই। জয় থেকে ইংল্যান্ড তখন ৩৫ রান দূরে। উইকেটে দুই জেমি—স্মিথ ও ওভারটন। আগের চারটি টেস্টই শেষ হয়েছে পঞ্চম দিনে। শেষ টেস্টটিকেও ঠিকই পঞ্চম দিনে টেনে নিয়ে গেল প্রকৃতি!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২২৪ ও ৩৯৬।
ইংল্যান্ড: ২৪৭ ও ৭৬.২ ওভারে ৩৩৯/৬ (ব্রুক ১১১, রুট ১০৫, ডাকেট ৫৪, পোপ ২৭; কৃষ্ণা ৩/১০৯, সিরাজ ২/৯৫, দীপ ১/৮৫)।
(৪র্থ দিন শেষে)