মোঃশাহআলম
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরপরই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির ৬ জন নেতাকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় তিনজন গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। আহতদের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
গুরুতর আহত ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি
হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা মো. বাবু খান, ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আ. হান্নান শেখ, এবং ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী রুবেল শেখকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও, জেলা উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য আ. মান্নান শেখ, বাকাল ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক তানভীর শেখ, এবং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অলিদ শিকদার আহত হয়েছেন।
নেপথ্যে গ্রেফতারের সন্দেহ
স্থানীয় ও আহত সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে পুলিশ বাকাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হেমায়েত শিকদারকে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে তিনি বাড়িতে ফেরেন। হেমায়েত শিকদারের সন্দেহ, তাকে গ্রেফতারের পেছনে বিএনপি নেতা আ. মান্নান শেখ ও তার ভাই হান্নান শেখের হাত রয়েছে।
এই সন্দেহের জেরে গতকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় পয়সারহাট বন্দরে হেমায়েত শিকদারের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল মহড়া দেয়। এরপর তারা জেলা উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য আ. মান্নান শেখের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে গালমন্দ শুরু করে এবং তার ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে তার ভাই ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আ. হান্নান শেখ ঘটনাস্থলে এলে তার উপরও অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
হামলাকারীরা এ সময় বাধা দিতে আসা বাকাল ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক তানভীর শেখ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অলিদ শিকদার, ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী রুবেল শেখের ওপরও হামলা করে তাদের আহত করে। এরপর হামলাকারীরা পয়সারহাট বন্দরের ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা মো. বাবু খানকে পয়সারহাট স্কুলের সামনের ব্রিজের ওপর বসে গুরুতর আহত করে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ, পরস্পর বিরোধী বক্তব্য
ঘটনার খবর পেয়ে এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
আহতদের অভিযোগ: হামলায় আহত ব্যবসায়ী আ. মান্নান শেখ বলেন, বাকাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত শিকদারের নেতৃত্বে মহড়া দিয়ে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনি আহত হন। বাধা দিতে গেলে তার ভাইসহ আরও ৫ জনকে তারা আহত করে।
অভিযুক্তের দাবি: অন্যদিকে, অভিযুক্ত বাকাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত শিকদার সাংবাদিকদের জানান, মারামারির সময় তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। সে সময় কে বা কারা তাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে, এতে তিনি আহত হন। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জে চিকিৎসাধীন আছেন।
অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা: থানা
এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. অলিউল ইসলাম বলেন, "ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
আহতরা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এবং হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।