গাজী মাহমুদ পারভেজ।।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার উত্তর ফুলদী, পানশানেরচর ও নাজির চর এলাকায় কবরস্থান সংলগ্ন সংযোগ সেতুর ভাঙা অংশ এক বছর ধরে পড়ে আছে। এতে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একমাত্র কবরস্থানটিও এখন রয়েছে ভাঙনের হুমকিতে।
স্থানীয়রা বলছেন, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটির একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। সেই সময় সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ পেলেও এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজও কোনো কার্যকর সংস্কার হয়নি।
নাজির চর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, “এই রাস্তাই একমাত্র যাতায়াতের পথ। কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নেওয়ারও উপায় থাকে না। প্রশাসন শুধু আশ্বাস দেয়, কিন্তু কাজের বেলায় দেখা যায়—শূন্য।”
পানশানেরচর গ্রামের বাসিন্দা সুমি আক্তার বলেন, “প্রতিদিন স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে পানি উঠে যায়। ছোট ছোট বাচ্চারা পড়ে যায়, অথচ দেখার কেউ নেই।”
গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার সামিউল আরেফিন বলেন,“এই রাস্তাটির টেন্ডার ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বলে দিয়েছি, কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত যেন সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে।”
তিনি আরও জানান,“বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে চারপাশে পানি থাকায় গাইড ওয়াল নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসে গাইড ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
এই বিষয়ে গজারিয়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (PIO) মো. আবু সাঈদ মল্লিক এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার জানানোর পরও প্রশাসনের টালবাহানার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে।
পানশালের চর গ্রামের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, “বর্ষা আসবে, তা তো আগেই জানত প্রশাসন। তাহলে কেন আগেই কাজ শুরু হয়নি? জনভোগান্তি কি পরিকল্পনায় নেই?”
দীর্ঘ মেয়াদে সংস্কার না হলে শুধু যোগাযোগ নয়, ভবিষ্যতে এলাকাটি পরিবেশগত ও সামাজিক সংকটেও পড়তে পারে।
এক বছরেও কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু কথা নয়, সময়মতো বাস্তবায়নই হতে পারে ভরসার একমাত্র পথ।
মন্তব্য করুন