পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ২নং পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদারের কাছে চাঁদা দাবী ,তার উপর হামলা ও অপহরণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নিজেকে নির্দোষ সাজানোর নাটক করে পরবর্তীতে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে পিরোজপুরের নব্য সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ জাকারিয়া মুন্সী।
শনিবার পিরোজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহীন বলেন, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাওলাদার মোয়াজ্জেম হোসেনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এলাকার শান্তি, শৃঙ্খলা ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ছাত্রজীবনে তিনি জিয়ানগর উপজেলা ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে শ্রমিক দলের জিয়ানগর উপজেলা সভাপতি ছিলেন। ২০০৯ সালে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে উড়োজাহাজ প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০২১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
চেয়ারম্যান শাহীনের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ৭টার দিকে বাড়ি থেকে খুলনা যাওয়ার পথে পিরোজপুর শহরের বড় পুল এলাকায় বালিপাড়া ইউনিয়নের আব্দুল হক মুন্সির ছেলে জাকারিয়া হোসেন মুন্সি ও তার সহযোগীরা পিরোজপুর পুরান স্ট্যান্ড বড় পোলের উপর তার গাড়ির পথরোধ করে। তাকে টেনেহিঁচড়ে তার নিজ গাড়ি থেকে
নামিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে এবং তার কাছে থাকা দুইটি আইফোন ছিনিয়ে নেয়। তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাসুদ সাঈদী, পিরোজপুর-২ আসনের জামায়াতে ইসলাম মনোনীত প্রার্থী ও আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী সহ জামায়াত ইসলামের সেক্রেটারী, সহকারী সেক্রেটারীসহ জামাযাত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন। সংবাদ পেয়ে পত্তাশী ইউনিয়ন সহ শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চেয়ারম্যান শাহীনের ৩০০শতাধিক শুভানুধ্যায়ী সদর থানার সামনে জড়ো হন। থানায় উপস্থিত সকলের সামনে মাসুদ সাঈদী বলেন " আমি শাহীন হাওলাদারকে চেয়ারম্যান বানিয়েছি।" এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয় এবং ভবিষ্যতে জাকারিয়া মুন্সী তার সাথে এই ধরনের আর কোনো আচরণ করবে না কিংবা চাঁদা দাবি করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্হিত সকলে বলেন " এই চাঁদাবাজ, অপহরনের চেষ্টাকারী জাকারিয়া মুন্সী ঢাকা থাকা অবস্হায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলো। বর্তমানে মাসুদ সাঈদীর নির্বাচনী প্রচারনার সামনের সাড়িতে থাকে।"
বিষয়টি সমাধান হওয়ার পরও বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যমে জাকারিয়া মুন্সী তাকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহীন হাওলাদার।
এছাড়া শুক্রবার জাকারিয়া মুন্সী একটি সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ উল্টো ও মিথ্যা অভিযোগ এনে নিজের অপরাধ আড়াল করতে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আত্মরক্ষার্থে জাকারিয়া মুন্সী গল্প সাজিয়েছেন বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।
একজন চেয়ারম্যান যদি এভাবে নতুন বাংলাদেশে চাঁদাদাবী, অপহরণচেষ্টা ও অপপ্রচারের শিকার হন, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা নিরাপদ এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
তাই জাকারিয়া মুন্সী এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার নিজের এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা তদন্ত করে সত্য প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মশিউর রহমান (মঞ্জু), ইন্দুরকানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করীম (ইমন), মেম্বার জুবায়ের হোসেন তালুকদার, মেম্বার কাওসার আহমেদ হাওলাদার, মেম্বার আসমা আক্তার লিমা, মেম্বার ডা. মো. ইউনুস, মেম্বার রুহুল আমিন শেখ, আলহাজ্ব সোহরাব হোসেন, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মো. রফিক আহমেদসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।