বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীর বুক চিরে অবৈধভাবে মাটি কাটার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে আটক করা হয়েছে MSC ইটভাটার ব্যবহৃত ৬টি ট্রলার এবং ১৪ জন শ্রমিক। অভিযানে নাম উঠে এসেছে বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জলিল ঘরামীর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সন্ধ্যা নদীর বিভিন্ন চর থেকে অবাধে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছিল। এতে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে ভাঙনের আশঙ্কা। ভয়ংকর এই কর্মকাণ্ড চলছিল প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায়—এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
অভিযান চালিয়ে প্রশাসন চর কাটা মাটি বোঝাই ৬টি ট্রলার জব্দ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে ১৪ জন শ্রমিককে। তারা সবাই MSC ইটভাটার হয়ে কাজ করছিল বলে জানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে।
এই অভিযানের খবর দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, তৈরি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। স্থানীয়রা জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জলিল ঘরামী দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিধ্বংসী এই কাজ চালিয়ে এলেও তার প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেননি।
এদিকে, অভিযুক্তদের ছাড়িয়ে নিতে ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি মাঠে নেমেছেন বলেও জানা গেছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ ও পরিবেশবাদীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,
> “নদীর এই মাটি লুট আমাদের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। প্রশাসনের অভিযান প্রশংসনীয়, তবে শুধু শ্রমিক নয়—মূল হোতাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটক ট্রলার ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নদী দখল ও পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে প্রশাসন।
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নদী রক্ষা আন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন