মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সানিম হোসেন (৮) নিহতের ঘটনায় মুহতামিম মাও. হাফেজ বশির আহমেদসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করে বুধবার (১৪মে) সকালে একটি হত্যা মামলা করেছেন সানিমের বাবা। লক্ষ্মীপুর সদর থানার মামলা নং-৪৪/২৫, এ মামলার প্রধান আসামী অভিযুক্ত শিক্ষক মাও. হাফেজ মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মোন্নাফ। মামলার অপর আসামী মাওলানা ফয়সাল ও মাদরাসা প্রধান বশির গা'ঢাকা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার বিকালে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার আল-মঈন ইসলামী একাডেমি নামে একটি কওমি মাদ্রাসায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর শরীরে বহু আঘাতের চিহ্ন থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানের দাবি আত্মহত্যা করেছে সে।
নিহত সানিম ওই মাদ্রাসার হিফ্জ বিভাগের ছাত্র ও রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মাতব্বর বাড়ির হুমায়ুন কবির মাতব্বরের ছেলে। সে ২০পারা পর্যন্ত কুরআন হিফজ সম্পূর্ণ করেছেন।মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা বশির উদ্দিন জানান, জোহরের নামাজের পর খাবার বিরতিতে হিফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসেন হাতে গামছা নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করার পর দীর্ঘ সময়ও বের না হওয়ায় দরজা ভেঙ্গে দেখা যায় সে গলায় গামছা দিয়ে টয়লেটের ভিতর ঝুলে আছে। শিক্ষকরা তাকে নামিয়ে আনার পর দেখা যায় তার মৃত্যু হয়েছে। সকাল বেলায় এক শিক্ষক তাকে কিছু বেত্রাঘাত করে, এছাড়া কোন নির্যাতন করা হয়নি। হয়তো এই ক্ষোভ ও অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে।
শিক্ষার্থী নিহতের বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রেজাউল হক সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে একটি কক্ষে মৃত অবস্থায় শিশুকে দেখতে পায়। শিক্ষকরা শিশুটি আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করলেও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাহমুদুর রহমান নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতের অভিবকদের দাবি পিটিয়ে হত্যার পর ঘটনা আড়াল করতে
লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তারা শিশু হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শান্তি ও বিচার দাবি করেন। আট বছরের শিশু শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার খবরে জেলা জুড়ে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় বইছে।
মন্তব্য করুন