ঢাকার কেরানীগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতার পুরনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাহিদুল হক (৪৯)।
তেলঘাট পুলিশ ফাঁড়ির একটি টহল দল শুক্রবার (১৩ জুন) রাত ১০টার দিকে আগানগর এলাকার তরিকুল্লাহ টাওয়ারের সামনে থেকে তাকে আটক করে। রাতেই তাকে থানায় নেওয়া হয় এবং পরদিন সকালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার পটভূমি: কী কারণে গ্রেপ্তার?
পুলিশ জানায়, সাহিদুল হক একটি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অজ্ঞাত আসামিদের তালিকায় দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহভাজন ছিলেন। চলমান তদন্তে তার সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি রাজনৈতিক মিছিল ও পাল্টা মিছিল চলাকালে সংঘটিত সহিংসতা ঘিরে দায়ের করা হয়, যেখানে যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে রিমান্ড আবেদন করা হবে, যাতে ঘটনার পেছনের মদতদাতাদেরও শনাক্ত করা যায়।"
কে এই সাহিদুল হক?
সাহিদুল হক কেরানীগঞ্জের পশ্চিম আগানগরের ইমামবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মরহুম পিয়ারা মিয়ার ছেলে। শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে তার রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয়।একসময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে এক মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি একজন বলিষ্ঠ বক্তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় প্রশংসিত নেতা ছিলেন। কেরানীগঞ্জে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো।
গ্রেপ্তার ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া :
সাহিদুল হকের গ্রেপ্তারকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
একাংশ বলছে, “আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। যদি তিনি সত্যিই জড়িত থাকেন, তদন্ত হওয়া উচিত।”
অন্যদিকে, তার ঘনিষ্ঠ ও সমর্থকরা বলছেন, “এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তার। দীর্ঘদিন পর মামলায় তার নাম জড়ানো রহস্যজনক।”
প্রশাসনের অবস্থান: এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি আইনানুগ প্রক্রিয়ার অংশ। তদন্তে নাম উঠে আসার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন