Najmul bepary।।
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার স্থানীয়দের কাছে এক সময়ের অযত্নের কচুরিপানাই এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছে আয়ের উৎস হিসেবে।
সম্প্রতি অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা কচুরিপানাই জাগালো অর্থের সম্ভাবনা। সময়ের ব্যবধানে এর ব্যবহার ও সহজলভ্যতার কারণে রফতানিযোগ্য পণ্য তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে; এমনকি রফতানি হচ্ছে বিশ্বের বহু দেশে। রঙিন পাপোশ, রকমারি ফুলদানি, দৃষ্টিনন্দন ফুলঝুড়ি, আর বিভিন্ন রঙের পাটি তৈরির কাঁচামাল এ কচুরিপানা। ব্যাগ, টুপি আর সুন্দর সব জায়নামাজও তৈরী হয় এর থেকে।
এই জিনিসগুলো অধিকাংশই পরিবেশবান্ধব ও প্লাস্টিক সামগ্রীর বিকল্প হিসেবে বিবেচ্য। ফলে দেশে-বিদেশে এর চাহিদা অনেক। এর সুবাদে উপজেলার দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের ফেলে দেওয়া কচুরিপানায় শতশত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কচুরিপানা এখন যোগান দিচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। কচুরিপানা থেকে তৈরি হওয়া কুটির শিল্প বিদেশে রপ্তানি করে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
কচুরিপানাকে আয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা। শুকনো কচুরিপানা বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে। প্রথমে জলাশয় থেকে ১৮ ইঞ্চি মাপের কচুরিপানা সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো কেটে তিন থেকে চার দিন রোদে শুকানো হয়। পরে ওজন দিয়ে সেগুলো বিক্রি করা হয়।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাঘ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ভরা মৌসুম থাকলেও এর সংগ্রহ চলে বছরজুড়ে। এছাড়াও দেখা যায়, গ্রামীণ সরু সড়কের পাশেই কাঁচা কচুরিপানা শুকানোর কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা।
মাদ্রাসাছাত্র হাফিজুর বলেন, বাবা মায়ের কাজে সহযোগিতা করার জন্য মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে ফিরে পড়াশুনার পরে অবসর সময়টাকে কাজে লাগাতে প্রথমে কাজটা শিখে। এখন দৈনিক একশ থেকে দুইশ টাকা আয় করতে পারছি।
উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় এ ব্যবসার সমৃদ্ধির বড় সংকট। তাই স্থানীয়দের দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটলে এ ব্যবসার সমৃদ্ধি ঘটাবে। আর এ ব্যবসা জাতীয় পর্যায়ের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।