মো. শাহজাহান ফকির।।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে জুয়া খেলায় হেরে রহিমা খাতুন (৬০) নামে এক বিধবা মহিলাকে পাশবিক নির্যাতন করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরকম অমানবিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে বিল্লাল মিয়া নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় তীব্র সমালোচনা সহ নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসী এবং ওই ইউপি সদস্যের সুবিচার প্রার্থনা করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, রহিমা খাতুন ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ফুলবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আবুল মনসুরের স্ত্রী। ১৫ বছর পূর্বে তাঁর তৃতীয় সন্তান ফারুক মিয়া পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার পর থেকে রহিমা খাতুন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। সেই শোক সইতে না পেরে মানসিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর থেকে সে তাঁর সামনে কাউকে পেলেই শরীরে হাত দিয়ে ছুয়ে দেওয়ার অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে। তবে কাহারও কোন ক্ষতি বা মারধর করে না সে। অপরদিকে বিল্লাল মিয়া একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। অনলাইন জুয়া খেলায় জড়িত ও জুয়ার এজেন্ট চালানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে ওই মহিলার বাড়ির সামনে দিয়ে অনলাইন জুয়া খেলতে যাওয়ার সময় বিল্লাল মিয়ার শরীর ছুয়ে দেয়। এর পরপরই তিনি জুয়ায় হেরে যান। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে বেলা ২টা ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ডে ওই মহিলাকে পেয়ে অপয়া বলে গালিগালাজ সহ তাঁর মারধর করে মহিলার মাথা ফাটিয়ে দেন। এসময় “তুই ছুইয়ে দেওয়ায় খেলায় হেরেছি। ফের কোনদিন ছুইলে তোকে জানে মেরে ফেলেবো।” এ কথা বলে বিল্লাল মিয়া স্থান ত্যাগ করেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে আহত মহিলাকে প্রথমে নান্দাইল হাসপাতালে নিয়ে গেলে, কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে। এতে তাঁর মাথায় আটটি সেলাই দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওই মহিলার পুত্র বধু ময়না আক্তার বাদী হয়ে নান্দাইল মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ ঘটনায় প্রত্যক্তদর্শী চায়ের দোকানদার অলি উল্লাহ ও স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, সকলের সামনেই মহিলাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে মেম্বার। এটি করা তার ঠিক হয়নি। অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল হালিম জানান, জুয়াড়ি বিল্লাল শুধু এ মহিলাকে নয়, এর আগেও নার্গিস আক্তার নামে এক মহিলা পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকেও মারধর করে ওই মেম্বার। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম খুররম সহ আরো অনেকেই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং মেম্বারের বিচার দাবী করেন। অপরদিকে অভিযুক্ত মেম্বার বিল্লাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার উপ-পরির্দশক এসআই সালাম উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ দিয়ে বাদী আর আসেনি। বাদী আসলেই মামলা নথিভূক্ত করা হবে।