প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 21, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 21, 2025 ইং
আলীকদমের মারাইংতং পাহাড়ে সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ

মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক
বান্দরবান পার্রত্য জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলার সীমানা নির্ধারণের পূর্বে মারাইংতং পাহাড়ে আবারো সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসন। মারাইংতং পাহাড়ের সীমানা নিয়ে বিরোধ নিরসনের স্বার্থে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঞ্জুর আলম ও লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন রবিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত জানান। সিদ্ধান্তে মারাইংতং পাহাড়ে তাঁবু, গাড়ি পার্কিং ও রাত্রি যাপনসহ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোন প্রকার অর্থ লেনদেন না করতেও নিষেধ করেন এ কর্রকর্তারা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবায়েত আহমেদ, থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন, আলীকদম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও লামা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান, তৈন মৌজা হেডম্যান মংক্যনু মার্মা, সাঙ্গু মৌজা হেডম্যান চ্যংপাত সহ সাংবাদিক, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ভুক্তভোগী অর্ধশতাধিক মুরুং সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, একটি চক্র মারাইংতং বৌদ্ধ জাদীর নাম ব্যবহার করে সাংগু মৌজার কিছু মুরুং সম্প্রদায়ের দখলীয় জায়গা জবর দখলের চেষ্টা চালায়।
পরে জবরদখলকারী আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের মংপাইনখইন পাড়ার বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ উইচারা ভান্তে, তৈন মৌজা হেডম্যান মংক্যনু মার্মাসহ ১২-১৩জনের বিরুদ্ধে লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী অভিযোগ করেন, সাংগু মৌজা হেডম্যান চ্যংপাত (ফৌজাদারী অভিযোগ নং ২১/২৫ইং)। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত বিরোধীয় জায়গায় স্থিতাবস্থার নির্দেশ দেন।
গত ৩০ জুলাই উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘মাতারইংতং বৌদ্ধ জাদীর নামীয় (বিবাদী) পাঁচ একর জায়গার বাহিরে বাদী পক্ষের জাযগা এবং সরকারি খাস জায়গায় প্রবেশ করলে, শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা থাকায় বিবাদী পক্ষকে তাহাদের বন্দোবস্তিকৃত পাঁচ একর জায়গা ছাড়া বাদী পক্ষের নালিশী জায়গা ও সরকারি খাস জায়গায় প্রবেশ বারিত করা হলো’।
এ স্থিতাবস্থা অমান্য করে জবর দখলের উদ্দেশ্যে বিরোধীয় জায়গায় একটি মারাইংতং হিল রিসোর্ট নির্মাণের পাশাপাশি একটি বৌদ্ধমূুর্তিও নির্মাণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে মারাইতংতং পাহাড়ে যান কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেুট মো. মঈন উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুই উপজেলার সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজাদারী অভিযোগ করেন সাংগু মৌজা হেডম্যান। এ প্রক্ষিতে বিরোধীয় জায়গায় স্থিতাবস্থার আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিবাদী কর্তৃক স্থিতাবস্থা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন বলে সরেজমিন সত্যতা পাওয়া গেছে। তবুও সীমানা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে লক্ষ্যে মারাইংতং পাহাড়ে সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে আবারো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখ
লামা ও আলীকদম উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ার দ্বারা দুই মৌজার সীমানা চিহ্নিতের পাশাপাশি মারাইংতং বৌদ্ধ জাদীর নামে তৈন মৌজা এবং সাংগু মৌজায় বন্দোবস্তিকৃত মোট ১০ একর জায়গা পরিমাপ করে দেওয়া হবে। এতে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসন হবে বলেও জানান তিনি
স্বত্ব © দৈনিক জনতার খবর ২০২৫ | ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।