গাজীপুরের টঙ্গীতে দুই শিশুসন্তান মালিহা আক্তার (৬) ও মো. আবদুল্লাহ ইবনে ওমরকে (৪) বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মা আলেয়া বেগম।
আজ রোববার বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন মিয়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আলেয়া বেগম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও টঙ্গী পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল রুম্মান বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আলেয়া বেগম আদালতে বলেছেন, হঠাৎই তাঁর মাথায় কী যেন একটা হয়েছে। তখন মনে হয়েছে তাদের কোপাতে। পরে তিনি বাসার বঁটি দিয়ে তাদের কোপান। ২০ মিনিট পর হুঁশ ফিরে দেখেন, তিনি দুই সন্তানকে মেরে ফেলেছেন। তাঁর ভুল হয়ে গেছে।
মালিহা আক্তার ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমরের বাবা আবদুল বাতেন মিয়ার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার তাতুয়াকান্দি এলাকায়। পরিবার নিয়ে তিনি আরিচপুর জামাইবাজার এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দুই সন্তানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর সন্দেহভাজন হিসেবে মা আলেয়া বেগমকে আটক করা হয়। শনিবার বাতেন মিয়া টঙ্গী পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করেছেন।
পুলিশ জানায়, টঙ্গীর আরিচপুরের যে বাড়িতে ওই পরিবার ভাড়া থাকত, সেখানে আশপাশে বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এসব ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, ঘটনাটি যে সময়ে ঘটেছে, ওই সময়ের মধ্যে তাঁদের ঘরে বা ফ্ল্যাটে আলেয়া বেগম ছাড়া আর কেউ যাতায়াত করেননি। এ ছাড়া ঘটনার পর আলেয়া নিজেই পাশের বাড়ি থেকে তাঁর দুই দেবরকে ডেকে নিয়ে আসেন। তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় তাঁর হাতে কাটা দাগ দেখে পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। একপর্যায়ে মধ্যরাতে আলেয়া বেগম তাঁর দুই সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।
এসআই আবদুল্লাহ আল রুম্মান জানান, নিহত দুই শিশু সন্তানের মা আলেয়া বেগমকে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।