একসময় বিশালকার ডাইনোসর পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়াত। প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে বিশাল গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় ডাইনোসর। যদি সেই বিপর্যয় না ঘটত তাহলে পৃথিবীর প্রাণের বিকাশ অন্য রকম হতো বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডাইনোসর প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর স্থলভাগে রাজত্ব করেছে। এই দীর্ঘ সময়কালে মাংসাশী দুই পায়ের ডাইনোসর থেরোপড, আকারে বড় গ্রিবাযুক্ত তৃণভোজী সরোপড, পাখির মতো অর্নিথিশিয়ানের মতো বিভিন্ন প্রজাতির ডাইনোসর পৃথিবীতে ছিল।
থেরোপড ডাইনোসরদের একটি শাখা থেকেই আজকের পাখির উদ্ভব হয়েছে। যদি বিলুপ্তি না ঘটত, তাহলে ছোট আকারের পালকযুক্ত থেরোপডরা আরও বুদ্ধিমান ও সামাজিক প্রাণীতে বিবর্তিত হতে পারত। তারা হয়তো গাছের ডালে বাসা বাঁধত, দলবদ্ধভাবে শিকার করত ও উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি করত। কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, এরা হয়তো আজকের দিনের বুদ্ধিমান স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো জটিল সামাজিক কাঠামো ও আচরণ প্রদর্শন করত। অন্যদিকে বড় আকারের থেরোপডদের মধ্যে টাইরানোসরাস রেক্সের বংশধররা আরও শক্তিশালী শিকারিতে পরিণত হতো।
অন্যদিকে বিশালকার সরোপডদের ক্ষেত্রেও বিবর্তনের প্রভাব দেখা যেত। তৃণভোজী প্রাণী হিসেবে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকত। বিভিন্ন ধরনের নতুন উদ্ভিদের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস মানিয়ে নিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছুটে বেড়াত এই ডাইনোসর। কিছু সরোপড হয়তো আরও ছোট ও দ্রুতগামী প্রজাতিতে বিবর্তিত হয়ে খোলা তৃণভূমিতে দলবদ্ধভাবে বাস করত।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ডাইনোসরদের বিলুপ্তি না ঘটলে আজকের পৃথিবীতে তাদের বুদ্ধিমান প্রজাতিও দেখা মিলত। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মস্তিষ্কের বিকাশের মতো কিছু ডাইনোসরের মস্তিষ্কের আকারও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পেত।