নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নে বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার নেতৃত্বে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বিকালে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া নিয়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
তারা বলেন, দল থেকে বহিষ্কৃত একজন ব্যক্তির নেতৃত্বে কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংগঠনে শৃঙ্খলা ভঙ্গ হচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে এবং দলীয় নীতিমালার অবনতি ঘটবে।
শোকসভায় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন, যুগ্ম আহ্বায়ক নায়েব আলী, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এনামুল হাসান, সদস্য সচিব মাসুদ আহমেদ, নরসিংদী সদর থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব রুবেল আহমেদ, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কালু মিয়া, মিজান মিয়া, সদস্য জব্বার মিয়া, বাদশা মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আব্দুল কাইয়ুমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাকে শুধু সদস্য সচিব পদ থেকেই নয়, দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু বহিষ্কারের পরও তিনি ইউনিয়নে বিএনপির ব্যানারে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আব্দুল কাইয়ুম একজন ‘বালুখেকো’ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। নরসিংদীর নজরপুর ইউনিয়নের দিলালপুর মৌজায় বালু মহল ইজারা নেওয়ার পর নিয়মিতভাবে ইজারার সীমানা লঙ্ঘন করে আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর ও গৌরিপুরার চর এলাকার মাঝ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। নির্ধারিত কাটিং ড্রেজারের পরিবর্তে ১৫ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করে তিনি প্রতিনিয়ত বালু কাটেন।
এর ফলে মেঘনা নদীর ভাঙনে বহু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং অনেক পরিবার গৃহ হীন হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর মামলা ,হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।স্থানীয় এক সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে নিউজ করায় তাকে অক্য ভাষায় গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দেয় এবং মিথ্যা মামলায় আসামি দেয়।ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছে এলাকাবাসী।
আলোকবালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আকরামুল ইসলাম সমির বলেন, কাইয়ুম অবৈধ বালু ব্যবসা করে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের কাজ করছেন, যার ফলে ত্যাগী বিএনপি কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাজ্জাক চেয়ারম্যান হত্যাসহ চারটি হত্যা মামলা, জমি দখল, নদী দখল, চাঁদাবাজির মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এখন তার নেতৃত্বে বিএনপির কোনো কর্মসূচি মানে দলীয় আদর্শের স্পষ্ট অপমান।
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং কাইয়ুমকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার কঠোরভাবে বলেছেন, দলের নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করলে তার কোনো স্থান বিএনপিতে থাকবে না। বহিষ্কৃত নেতার নেতৃত্বে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে জেলা বিএনপির নেতাদের অবহিত করবো, যাতে ভবিষ্যতে কেউ কর্মসূচির আড়ালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন সরকারের কাছে আমাদের প্রতিবেদক জানতে চান,বহিস্কৃত সদস্য সচিব কে নিয়ে প্রোগ্রাম করায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা?জবাবে তিনি বলেন এটা নায়েব আলী মেম্বার এর ইচ্ছা,সে কাকে দাওয়াত দিবে এটা তার ব্যাপার। তাছাড়া নায়েব আলী হয়তো খোকন ভাইকে অবগত করেছে।
বহিস্কৃত সদস্য সচিব কাইয়ুম তার বক্তব্যে বলেন, পদপদবি ব্যাপার না, খোকন ভাই,শিরিন সুলতানা ভাবিই আমার পদ।