মোঃ মনির হোসেন পরাগ।।
মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ৩নং রাজদী সরকারী প্রাথমিকি বিদ্যালয়ের মাঠের জায়গা দখল করে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে
আবেদ মনসুর কনেস্ট্রশনের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। আর এ কাজে সহযোগীতার অভিযোগ উঠেছে অত্র বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক বি.এম সরোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে সরকারী ২২ ফিট প্রস্থ হালট থাকার পরও ঠিকাদার ও প্রধান শিক্ষকের যোগসাযোশে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে রাস্তা ও কালর্ভাট নির্মাণ করা হয়।
এলাকাবাসী আরো জানান
রাস্তা ও কালর্ভাট নির্মাণ করার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন প্রকার বাঁধা দেয়নি বা তার যথাযথ কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও তিনি এ ব্যাপারে অবহিত করেন নাই।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আই ইউ জিপি প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ১৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৪৬ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ রাজদী খোকন হাওলাদার এর বাড়ি হতে ভায়া ৩নং রাজদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে ( মাঝে কালভার্ট নির্মাণ বাদে) মোট ৬৬৫ মিটার সড়ক দক্ষিণ রাজদী বিসি রোড পর্যন্ত কাজ পায় আবেদ মনসুর কনেস্ট্রশন ঠিকাদার প্রতিষ্টান। আবেদ মনসুর কনেস্ট্রশন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে সাব কন্ট্রাক হিসেবে কাজটি ক্রয় করে বাস্তবায়ন করে মেসার্স সর্দার (জেভি) আর ঠিকাদার আব্দুর রহমান পন্নু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালকিনি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ৩নং রাজদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে কালকিনি পৌরসভার রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করে। এতে বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত কচিকাচা শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ একেবারে ছোট হয়ে যায়। বিদ্যালয়ের জাগয়া দখল করে পৌরসভার রাস্তা ও কালভার্ড নির্মাণ করায় এলাকার সচেতন মহলে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গায় দিয়ে পৌরসভার রাস্তা করার সময় পশ্চিম পাশে সরকারী ২২ফিট হালট থাকা সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষক কি ভাবে স্কুলের জায়গা দিয়ে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মণ করতে দিলো এবং কেন দিলো কিছুূই বুজতেছিনা। তাহলে কি প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারের যোগসাযোশে সরকরী ২২ফিট হালট বাদ দিয়ে স্কুলের জায়গা দিয়ে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করতে দিলো।
৩নং দক্ষিণ রাজদী সরকারি প্র্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিএম সরোয়ার হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি
বলেন, আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি এবং কাজে বাধা দিয়েছি আমার কথা ঠিকাদার শুনে নাই, তারা তাদের মত করে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করেছে। বিদ্যালয়ের জায়গা দিয়ে পৌরসভার রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণের ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা বা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন না আমি এটিও বা টিও স্যারকে জানাই নাই।
সরকারি ২২ ফি হালট থাকার পরও কেন বিদ্যালয়ের জায়গায় দিয়ে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করেছেন এই প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার আব্দুর রহমান পন্নু হাওলাদার তার মুঠোফোনে বলেন প্রধান শিক্ষক এর উপস্থিতিতে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করেছি। এই কথা বললে ফোন কেটে দেন।
৩নং রাজদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ক্ষিরোদ চন্দ্র রায় বলেন রাস্তা ও কালভার্ট করার সময প্রধান শিক্ষক আমাকে কিছুই জানায় নাই। আপনার ফোনের পর আমি জানতে পারলাম বিদ্যালয়ের জায়গায় দিয়ে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করেছে।
কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান বলেন, ৩নং রাজদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়াগা দখল করে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। প্রধান শিক্ষককের বিদ্যালয়ের জায়গা রক্ষা করার এখতিয়ার আছে তবে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য বিদ্যালয়ের জায়গা দেওয়ার এখতিয়ার তার নাই।
কালকিনি পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. রাকিব হাসান জানান, আপনারা একটি কথা জেনে রাখেন পৌরসভার নিজস্ব কোন জায়গা নাই বা পৌরসভা কোন জায়গা কিনে কাজ করে না। তাই আমরা সরকারী ও ব্যাক্তি মালিকানা জায়গা নিয়ে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ করেছি।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর সভার প্রশাসক সাইফ-উল-আরেফিন বলেন,আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। রাজদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে দিয়ে পৌরসভার একটি রাস্তা ঢালাই রাস্তা ও কালভার্ট গিয়েছে এ বিষয়ে স্কুলের যে প্রধান শিক্ষককের কাছে জানতে চাইবো এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার যিনি আছেন তার কাছে জানতে চাইবো। যেহেতু স্কুলের সম্পত্তি স্কুলের নামে লিপিবদ্ধ থাকে। পরবর্তীতে যাযা আমাদের করনীয় আমরা তাই করবো। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের যদি কোন গাফিলতি থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিবেন কি না এই প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন প্রধান শিক্ষককের যদি কোন গাফিলতি থাকে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।