বরিশাল সদর উপজেলার ৭ নম্বর চরকাউয়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গনি সরদারকে ইউনিয়ন আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ইউনিয়ন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এ কমিটিতে মোঃ গনি সরদারকে আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা।
এর মূল কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১১ নভেম্বর ২০২১ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। দলের স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল— ঐ নির্বাচনে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবে না।
তবে গনি সরদার সেই নির্দেশ অমান্য করে বিএনপি পরিচয় ব্যবহার করে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, যা স্পষ্ট দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সামিল।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ১১ জুন ২০২৫ তারিখে উল্লেখ করা হয়েছে— "বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, দলের সেইসব নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির কোনো প্রকার সম্পর্ক থাকবে না।"
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে— কিভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী গনি সরদারকে আবারও ইউনিয়ন আহ্বায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, "এই সিদ্ধান্তের পেছনে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন বাচ্চুর হাত রয়েছে। তিনি তার ঘনিষ্ঠ লোকজনকে কমিটিতে আনতেই গনিকে আহ্বায়ক বানিয়েছেন। তা-ও আবার তাড়াহুড়ো করে সাদা কাগজে লিখে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি প্রকাশ করেন, যা অত্যন্ত অস্বচ্ছ ও নিয়মবহির্ভূত একটি পদক্ষেপ।"
এ নিয়ে তৃণমূলসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষোভ ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত দলের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলা প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নজরে এসেছে এবং এ নিয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।