প্রিন্ট এর তারিখঃ Jun 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jun 15, 2025 ইং
কুড়িগ্রামে ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়ম, তালিকায় সচ্ছল ও চাকরিজীবী

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভিজিএফ এর তালিকায় দরিদ্রদের নামের পরিবর্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সরকারী-বেসরকারি শিক্ষকসহ প্রায় ২ হাজার সচ্ছল ব্যক্তির নাম।
অভিযোগ রয়েছে এসব নামের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া ১০ কেজি চালের স্লিপ চেয়ারম্যান মেম্বাররা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে দেন আগেই। তবে বিতরণের সময় স্থানীয় সচেতন জনতা বাঁধা দেয়ায় এসব বেনামী স্লিপের চাল উত্তোলন করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। ঈদুল আজহার আগের দিন বিতরণ শেষে গুদামে থেকে যায় প্রায় সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল।
ভিজিএফের তালিকায় অনিয়ম রয়েছে বলে এসব চাল পরবর্তীতে তালিকা প্রস্তুত করে বিতরণের কথা বলেছে প্রশাসন। তবে এই তালিকা প্রস্তুতেও অনিয়মের আভাষ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৮ নং বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৫ হাজার ৭৪৫জন হতদরিদ্র মানুষের জন্য ৫৭.৪৫ মেট্রিকটন চল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতিজন হতদরিদ্র মানুষ পাবেন ১০ কেজি চাল। এসব হতদরিদ্র মানুষের তালিকা চেয়ারম্যান মেম্বাররা প্রস্তুত করেন। পরে উপজেলা কমিটি যাচাই বাছাই করে তালিকা অনুমোদন দেন। তবে ৮ নং বলদিয়া ইউনিয়নের হতদরিদ্র মানুষের নাম বাদ দিয়ে প্রায় ২হাজার সচ্ছল ও চাকরিজীবীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অভিযোগ উঠে গত ঈদুল ফিতরের আগে প্রস্তুত করা এই তালিকায় রাখা হয় প্রায় ২ হাজার সচ্ছল ও চাকরিজীবীদের নাম। আর এসব নামে বরাদ্দ দেয়া চাল বিক্রি করে দেন চেয়ারম্যান মেম্বার।
গত ঈদুল ফিতরে এই কাণ্ড প্রকাশ হলে এবার ঈদুল আজহার বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় সচেতন মহল। পরে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নামের সাথে স্লিপ প্রাপ্ত মানুষকে মিলিয়ে চাল বিতরণ করে প্রশাসন। এতে বেড়িয়ে আসে তালিকায় প্রায় ২ হাজার স্লিপপ্রাপ্ত বেনামী মানুষের নাম। পরে অ-বিলিকৃত সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল নেয়ার মানুষ না পাওয়া গেলে সেগুলো ইউনিয়ন পরিষদ গুদামে সিলগালা করে রাখা হয়।
তালিকায় দেখা যায়, ১১৩৮ নম্বর নামের ঘরে রয়েছেন শ্রী স্বপন কুমার সরকার। তিনি বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ২৯২১ নম্বরে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী, ২৯৩৯ নম্বরে রয়েছে সেচ্ছাবেক দলের নেতা লুৎফর রহমানের নাম, ২৯৪৯ নম্বর তালিকায় রয়েছে সচ্ছল ব্যক্তি আইনুল হক, ২৫৭ নম্বরে রয়েছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশরাফুজ্জামানের নাম, ২৫৮ নম্বর তালিকায় রয়েছে আরমান আলী নামের আরেকজন প্রাথমিকের শিক্ষকের নাম। এভাবে প্রায় ২হাজার সচ্ছল মানুষের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব তালিকা ভুক্তরা জানান, তারা কেউ জানেন না তাদের নাম কিভাবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
স্বত্ব © দৈনিক জনতার খবর ২০২৫ | ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।