রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাহেরপুর সালাফিয়াহ্ মাদ্রাসা—একটি আধুনিক ও নৈতিক শিক্ষার সমন্বিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বল্প সময়েই এলাকাবাসীর আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও মানবিক চিকিৎসক মোঃ মনসুর আলী
বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন এবং রয়েছে ৬টি শাখা। শিক্ষার্থীদের আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বিত পাঠদানের মাধ্যমে গড়ে তোলা হচ্ছে আগামী দিনের আলোকিত মানুষ।
মোঃ মনসুর আলী ১৯৬০ সালের ১৩ নভেম্বর নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ১৪ নম্বর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের এক প্রত্যন্ত গ্রামের মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা নেন বিলবয়রা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর মাধ্যমিক শেষ করেন শেরকৈল শিমলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চ মাধ্যমিক তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে।
পরবর্তীতে নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে বি.এসসি এবং এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন, যেখানে তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন।
শিক্ষকতা শুরু ১৯৮০ সালে দ্বীপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে। ১৯৮২ সালে তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২০ সালে ৪০ বছরের গৌরবময় শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানেন।
তাঁর সততা, নিষ্ঠা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে এলাকাবাসীর কাছে আদর্শ শিক্ষকে পরিণত করেছে। বহু প্রাক্তন শিক্ষার্থী আজ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষকের পাশাপাশি মোঃ মনসুর আলী একজন দক্ষ ও সেবামূলক চিকিৎসক হিসেবেও পরিচিত। ১৯৮২ সালে ‘হোমিও রিসার্চ কর্নার’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮৮ সালে ডিএইচএম এস ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত হন। এছাড়া ১৯৮৬ সালে যুব উন্নয়ন থেকে গবাদি পশুপাখি পালন ও চিকিৎসায় প্রশিক্ষণে প্রথম গ্রেড এ প্রথম স্থান লাভ করেন। তাঁর মানবিক চিকিৎসা সেবা পেয়ে উপকৃত হয়েছেন অসংখ্য রোগী।
শিক্ষা ও চিকিৎসা—দুই ক্ষেত্রেই তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও তাঁর রয়েছে উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তা।
তাঁর কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এগিয়ে আসছেন সমাজসেবায়। এলাকাবাসীর আশা, তাঁর মত আলোকিত মানুষ সমাজে আরও গড়ে উঠুক তাহেরপুরের মত অন্যান্য জনপদে ।