জেলার সরাইল উপজেলার বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া একমাত্র সরকারি হাসপাতালটির ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৬ তলা ভবনের নির্মাণকাজ ফেলে ঠিকাদার নেই এলাকায়। এটি সরাইল উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। জানা যায়, ২০২২ সালের শেষের দিকে ঠিকাদারের মাধ্যমে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শিরা বলেন, ঠিকাদার শুরুতেই খুবই ধীরগতিতে যেনতেন ভাবে কাজ শুরু করে।
বিগত ৫ অক্টোবর বিপ্লবের পর আচমকা ভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমে ঠিকাদার ও তার কোন প্রতিনিধি কে খুঁজে পাওয়া যায় নাই। ভবনটি সময়মত নির্মিত না হওয়ায় স্থানাভাবে গর্ভবতী মায়েদের কক্ষে মেঝে বেঞ্চে এমনকি প্রশাসনিক ভবনের আশেপাশে ভর্তিকৃত রোগীরা রাতদিন অতিবাহিত করছে।
ভুক্তভোগীদের বক্তব্য হলো ঠিকাদারের চরমঅবহেলায় কাজের মেয়াদ শেষ হলেও মাত্র ২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যে কারণে স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। প্রতিবেদক কর্তৃক সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় ২০২২ সালে সরাইল হাসপাতালের ৬ তলা ফাউন্ডেশনের তিনতলা বিশিষ্ট ভবন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া যায়। টেন্ডারে ৩০ ভাগ কমে কাজটি জোটে অংকুর ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ১০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয় কাজের চুক্তি মূল্য।
২০২২ সালের নভেম্বরের শেষ /ডিসেম্বরের প্রথমদিকে কাজ শুরু করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২৩ মাসে কাজ করেছে মাত্র২৫ ভাগ। এলাবাসীর অভিযোগ কাজের শুরুতেই অনিয়ম, দূর্নীতি, ধীরগতি আর ছিল নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। তখনকার ক্ষমতাসীন দলের শক্তিশালী নেতারা ঠিকাদারের পিছনে ছিল বলে ঠিকাদার কাউকে তোয়াক্কা করতেন না।কাজটি দেড়বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। বছর খানেক আগেই কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা।
০৫ ই অগাস্টের পর থেকে খোজ নেই ঠিকাদারের। অরক্ষিত, অযত্ন, অবহেলায় এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে মুল্যবান নির্মাণ সামগ্রী। সময়মত নির্মাণ কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় দূর্ভোগ লাঘবে প্রশাসনিক ভবনে স্থানান্তর করে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন বিভাগের কাজ। বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিভাগের সকল শ্রেণির রোগীদের প্রশাসনিক ভবনে জগা খিচুড়ি এলাহি কান্ড সৃষ্ঠি হয়েছে।
রোগীদের গিজগিজ অবস্থান আর গরমে পরিবেশ অস্বস্থিকর হয়ে পড়েছে। অনেক রোগী রাত্রিযাপন করছে মেঝেতে,চিপাচাপায় আর বারান্দায়। বর্তমানে উপজেলা সদরের একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে রোগীদের সীমাহীন দূর্ভোগ ও কষ্টের শেষ নেই।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন,কাজ প্রায় ০৯ মাস যাবদ বন্ধ। বছর ঘনিয়ে আসছে । জায়গার সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা কষ্ট করছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করনে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
একটি নির্ভরশীল সুত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার মো, জুয়েল কারো নির্দেশে কাজ বন্ধ করেন নাই। সারা বাংলাদেশে ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ ০৫ অগাস্টের পর থেকে বন্ধ আছে। ঠিকাদারের কাজ করার ইচ্ছাও আছে। প্রকল্পটি পুনরায় একনেকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলেই কাজ শুরু হবে।